
দৃষ্টিপাত : প্রতিটি ইউনিয়নে চাই গণকবরস্থান
০৯ মে ২০১৮,বুধবার, ০০:০০

ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কেউ নদীভাঙনের শিকার, কেউবা বাবার জমি বিক্রির জেরে, আবার কেউ জন্মগতভাবেই ভূমিহীন মানুষের সন্তান। যেভাবেই হোক, কথা হলোÑ নানা কারণে আমাদের দেশে বাড়ছে এই ভিটেমাটিহীন মানুষের সংখ্যা। অনেকেই হয়তো ভালো চাকরি করে ফ্ল্যাট কিনছেন, আবার অনেকেই প্লট কিনে বাড়ির মালিক হয়ে যাচ্ছেন এ সংখ্যা খুবই সামান্য। আরামে থাকতে গিয়ে গ্রামের বাড়ির সব জমি বিক্রি করে কেউ শহরে পাড়ি জমিয়েছেন। দেখা যায়, গড়ে প্রায় প্রতিটি গ্রামে কিংবা শহরের কোনো ছোট এরিয়াতে একটি ফ্ল্যাট কিংবা তিন কাঠা জমির ওপর নির্মিত বাড়ির মালিক, এর পরিমাণ ২৫ শতাংশের বেশি নয়। আর ভাড়া বাসায় থাকে ভূমিহীন অন্তত ৩০ শতাংশের বেশি। এরা হয়তো বছরে একবার নিজের গ্রামে থাকা আত্মিয়ের বাসায় বেড়াতে যান। কথা হলো, এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কেউ যদি মৃত্যুবরণ করে তখন একপ্রকার জটিলতা দেখা দেয় তাকে দাফন করা নিয়ে। ফ্ল্যাটে কিংবা বাড়ির ভেতরে তো আর কাউকে কবর দেয়া সম্ভব নয়, তাই অনাগত দিনে এই সমস্যার আরো জটিলতা দেখা দিতে পারে। সমাধান আসতে পারে যেভাবেÑ হয় আত্মিয়ের কোনো বাড়ি অথবা পৈতৃক কবরস্থান কিংবা গণকবরস্থানে দাফনের মাধ্যমে। আর যাদের কপালে তাও জুটে না; তাদের ঠাঁই হয় আঞ্জুমান মফিদুলের আশ্রয়ে। শেষ বিদায়ে কোথায় ঠাঁই হবে এই অনিশ্চয়তা থেকে খুব সহজে মানুষকে প্রশান্তি এনে দিতে পারে যে সমাধানটি তা হলোÑ প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে গণকবরস্থান বাস্তবায়ন করা। যেখানে একজন মানুষ জীবদ্দশায় কিছু ডোনেশন দিতে পারে, যা তার নামে লিপিবদ্ধ থাকবে। আর সে জন্য স্থানীয় সরকার অর্থাৎ ইউনিয়ন পরিষদ এ উদ্যোগ ফলপ্রসুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে। একজন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকল্প গ্রহণ করলে প্রতিটি গ্রামে যে পরিমাণ ওয়াকফ জমি রয়েছে, তার যেকোনোটিতে গ্রামের মানুষকে সাথে নিয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শেষ বিদায়ের বেলা ভূমিহীন মানুষগুলোও অন্যের অবজ্ঞার পাত্র না হয়ে তার ডোনেশন দেয়া কবরস্থানে আশ্রয় পেতে পারে। আগামী দিনগুলোতে যেন মৃত্যুর পর দাফনের স্থান নিয়ে কোনো ভূমিহীন মানুষের দাফন কাজে কোনো জটিলতা দেখা না দিতে পারে সে জন্য গণকবরস্থান প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনসহ সব মহল এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা করি।
প্রকৌশলী সাব্বির হোসেন
শ্রীপুর, গাজীপুর